উচ্চতা মাত্র তিন ফুট, হয়েছেন একের পর এক বঞ্চনার শিকার, আজ তিনি IAS অফিসার

আমাদের সমাজে এমন অনেকেই আছে যারা মে’য়েদের বোঝা ভাবে, আর তাঁরা যদি শারীরিক দিক থেকে দিব্যাঙ্গ হয়ে যায় তাহলে তো তাঁকে গোটা সমাজই অন্য নজরে দেখে। এরকম এক মে’য়ের কাহিনী আজ আম’রা আপনাদের বলতে চলেছি।
যিনি শারীরিক দিক থেকে দিব্যাঙ্গ হওয়ার কারণে সমাজের বঞ্চনার শিকার হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তাঁর একটি কাজ সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। আজ তিনি রাজস্থানের আজমে’রে জে’লা আধিকারিক পদে নিযু’ক্ত। ওনার নাম আরতি ডোগরা (arti dogra)। আর উনি মাত্র তিনফুটের।

আরতি ডোগরা এখন রাজস্থান ক্যাডারের IAS অফিসার। আরতির উচ্চতা কম হলেও, আজ তিনি গোটা দেশের মহিলা এবং মহিলা IAS আধিকারিকদের রোল মডেল হয়ে উঠেছেন। আরতি ডোগরাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও খুব পছন্দ করেন। আরতি উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা। ওনার জন্ম উত্তরা খণ্ডের দেরাদুনে হয়েছিল। আরতি ২০০৬ সালে IAS অফিসার হয়েছিলেন। ওনার উচ্চতা মাত্র তিন ফুট ছয় ইঞ্চি। আর এই কারণে ছোট বেলায় উনি অনেক বৈষম্যের শিকার হন।

গোটা সমাজ আরতিকে বৈষম্যের চোখে দেখত, কিন্তু তাঁর বাবা-মা সবার উপরে নিজের সন্তানকে খুবই ভালবাসত আর তাঁকে ভালো শিক্ষা দিয়ে এতটাই স্বাবলম্বী বানিয়েছে যে, আজ গোটা সমাজ তাঁকে ভালোবাসার চোখে দেখে এবং তাঁকে সন্মান দেয়। আরতি নিজের কার্যকালে অনেক বড় বড় কাজ করেছেন। আর তিনি কোন মানুষকেই অছ্যুত হিসেবে দেখেন নি। ওনার কাছে সবাই সমান। উনি যেই বঞ্চনা ছোট বেলায় সহ্য করেছেন, সেই বঞ্চনার শিকার কাউকে হতে দেবেন না বলেন পণ করেছেন।

জানিয়ে দিই, আরতির বাবার রাজেন্দ্র ডোগরা সে’নার একজন অফিসার। আর মা কুমকুম ডোগরা একজন স্কুল শিক্ষিকা। আরতির জন্মের সময়েই ডাক্তাররা বলে দিয়েছিলেন যে, সে বাচ্চাদের সাথে সাধারণত ভাবে স্কুলে পড়াশুনা করতে পারবে না। আর এরপর যখন আরতি ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল, তখন সমাজ তাঁর প্রতি বঞ্চনা শুরু করে দিলো।

সবার সাথে ল’ড়াই করে আরতির বাবা-মা তাঁকে বাকি বাচ্চাদের সাথেই স্কুলে পড়াশোনার জন্য ভর্তি করেন। অনেক আ’পত্তি স্বত্বেও ওনারা আরতির পড়াশোনা নিয়ে কম্প্রোমাইজ করার জন্য প্রস্তুত ছিল না।

তাঁদের একটাই কথা ছিল, আর সেটা হল আমাদের এই সন্তানই আমাদের সব স্বপ্ন পূরণ করবে। আরতি দেরাদুনের বেলহাম গার্লস স্কুলে পড়াশোনা করে। এরপর দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডি শ্রীরাম কলেজ থেকে ইকোনমিক্সে গ্রাজুয়েশন করেন। এরপর UPSC Indian Administrative Service এর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন তিনি। এখন আরতি দেশের অনেক যুবতীরই রোল মডেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *