বরিশাল-ঢাকা নৌপথের যাত্রীবাহি বিলাসবহুল নৌ-পরিবহন এমভি মানামী লঞ্চের মালিক আব্দুস সালাম বাচ্চুর বি’রু’দ্ধে পরকীয়া প্রেমের ফাঁ’দে ফেলে আপন চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী ভাগিয়ে বিয়ে করার অভি’যোগ উঠেছে।
চাচাতো ভাই প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বেশিদূর এগোতে পারেনি ভুক্তভোগী ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম টিপু। তবে লঞ্চ মালিক চাচাতো ভাইয়ের কু-কী’র্তির বিস্তর তুলে ধরে এবং নিজের সন্তানদের বাঁচাতে ১১ আগস্ট বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী সাইদুল।
শুক্রবার রাতে সাধারণ ডায়েরীর অভি’যোগতদন্ত করে প্রতিবেদন রিপোর্ট প্রদান করার দায়ীত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে এসআই আজমলকে। তিনি এই প্রভাবশালী ব্যাক্তির বি’রু’দ্ধে দায়ের করা পরকিয়ার অভি’যোগ তদন্ত করতে শিঘ্রই মাঠে নামবেন বলে জানান।
থানার সাধারণ ডায়েরী সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে পটুয়াখালি জেলার বাউফল উপজেলার বাহেরচর গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজার খসরু আলম সিকদারের মেয়ে সুরভী আলম সাথীর (৩৩) সাথে সাইদুল ইসলাম টিপুর পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। এরপর প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তাদের সংসার জীবন বেশ ভালোই চলছিল। এই দম্পতির সংসার জীবনে আবু মাহযুবা নির্ঝর (১৩) নামে একটি ছেলে ও সাফিয়া ইসলাম নিয়ন্তি (৩) নামের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।
এরই মধ্যে হঠাৎ ২০১৮ সালে সুন্দরী গৃহবধূ সাথীর ওপর নজর পড়ে সাইদুলের আপন চাচাতো ভাই মানামি লঞ্চের মালিক প্রায় ষাট বছর বয়সী আব্দুস সালামের। এরপর থেকেই ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে আপন করে পেতে কৌশলি পরিকল্পনা আঁকেন। অবশ্য সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে থাকেন চাচাতো ভাসুর আব্দুস সালাম।
আরও জানা গেছে, ২০১৮ সালের শেষ দিকে বরিশালে ‘লজিক স্টার’ নামক একটি ডেভেলপার ব্যবসায় চাচতো ভাই টিপু ও তার সুন্দরী স্ত্রী সাথীকে বিনা অর্থায়ানে অংশীদার বানানোর চুক্তিতে ওই দম্পতির সংসার জীবনে প্রবেশ করে স’র্ব’না’শা সালাম। এরপর টিপুর কাছে বিশ্বস্ত-শ্রদ্ধাভাজন বড় ভাই এবং তার সুন্দরী স্ত্রী সাথীকে নিজের বিত্ত বৈভবের প্রতি আকর্ষিত করতে বরিশাল শহরের বাংলাবাজার এলাকায় বসবাসের জন্য এই দম্পতিকে একটি ফ্লাট কিনে দেন মানামী লঞ্চ মালিক সালাম বাচ্চু। এতে টিপুর মনে শ্রদ্ধার সিংহাসনে শক্ত করে বসেন বড় ভাই সালাম। সম্পর্কের গভীরতায় টিপুর বাসায় যাতায়াত শুরু করে জাপান প্রবাসী সু-চতুর সালাম।
একই সাথে পরিকল্পনা অনুযায়ী টিপুর সুন্দরী স্ত্রী সাথীকে নিজের অর্থবিত্ত এবং জাপান নিয়ে যাওয়ার প্র’লো’ভন দেখায় সালাম। সেই লো’ভ সামাল দিতে না পেরে ষাট বছর বয়সী সালামের সাথে পর’কী’য়া প্রেমে জড়িয়ে পরে টিপুর স্ত্রী সাথী। এরপর থেকেই সালাম ও সাথীর মধ্যে চলতে থাকে গভীর প্রেমলিলা। যা কোন মতেই ছোট ভাই টিপু বুঝে উঠতে পারেনি। যার কারণে সালামের আঁকা ছকটি আরও শক্ত অবস্থানে পৌঁছায়।
সূত্রে আরও জানা গেছে, লঞ্চ মালিক সালাম বাচ্চুর সাথে পর’কী’য়ায় জড়ানোর পর সম্পদের লো’ভে সাথী তার স্বামী টিপুকে তা’লা’কে বাধ্য করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। যার ফলশ্রুতিতে পরকীয়া প্রেমিক সালামের যোগসাজশে স্বামী টিপুর নামে মি’থ্যা না’টক সাজিয়ে নারী নি’র্যা’ত’নের মা’ম’লা দেয় স্ত্রী সাথী। এতে বিস্মিত হয়ে মা’ম’লার বিষয়টি সম্পর্কে টিপু তার সবচেয়ে কাছের এবং আস্থাভাজন বড় ভাই মানামী লঞ্চ মালিক সালামের কাছে জানিয়ে পরামর্শ চান। তখন বড় ভাই সালাম টিপুকে পরামর্শ দিয়ে বলে, ‘আগে তোমার স্ত্রী সাথীকে তালাক দেও, বাকি ব্যবস্থা আমি করবো’। বড় ভাইয়ের নির্দেশ ও প্রচ্ছন্ন হু’ম’কিতে ভয়ে একপর্যায়ে সহিদুল ইসলাম টিপু তার স্ত্রী সাথীকে তালাক দেয়। আর এতেই বাস্তবায়িত হয় সাথীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে অঙ্কিত সালামের ২০১৮ সালের সেই নীলনকশা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, তালাকপ্রাপ্তির পরে ২০১৮ সালের ২৬ জুন বরিশাল নগরীর ১০নং ওয়ার্ডেরএকটি কাজী অফিসের মাধ্যমে সেই সালাম সন্তানসহ ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সাথীকে নতুনভাবে বিবাহ করে। এর কিছুদিন পর সাইদুল ইসলাম টিপুর নামে দেওয়া বরিশাল শহরের বাংলাবাজারের সেই ফ্লাট ও ডেভেলপার ব্যবসায়ের অংশিদারিত্ব কেড়ে নেয় সাবেক স্ত্রীর স্বামী নতুন স্বামী সালাম। নিমিষেই সবকিছু হারিয়ে দি’শে’হা’রা হয়ে পড়েন টিপু। এখানেই শেষ নয়।
শুধু টিপুর স্ত্রী-সন্তানকে নিয়েই ক্ষা’ন্ত হয়নি লঞ্চ মালিক সালাম। এরপর শুরু করে টিপুকে অব্যাহত হু’ম’কি-ধা’ম’কি। যা এখনও চলমান। এতে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় ভুগছেন অ’সহায় টিপু। তার অভি’যোগ, ধুর’ন্দ’র নারী লো’ভী সালাম বাচ্চুর সকল কাজে সহযোগিতা করে আসছে সাথীর ছোট ভগ্নিপতি মইনুদ্দিন জিতু। অর্থের প্রভাবে সালামের এই কু-ক’র্মকা’ন্ডে জিতু সহযোগিতা করে আসছে। এছাড়া তার নামে মা’দ’কসহ একাধিক মা’ম’লা রয়েছে।
সাইদুল ইসলাম টিপু ওই জিডিতে উল্লেখ করেছেন, তার দুটি সন্তান সাবেক স্ত্রী সাথীর সাথে বরিশাল নগরীর জর্ডণ রোডস্থ একটি বাসায় থাকে। সম্প্রতি টিপু জানতে পারেন তার ওই দুই সন্তানকে জাপান নেয়ার নামে বিদেশে পাঁ’চা’রের জন্য পাসপোর্ট বানাতে দিয়েছে সালাম। এজন্য তিনি আইনের সহায়তাও চেয়েছেন।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে ভুক্তভোগী সাইদুল ইসলাম টিপু জানান, আব্দুস সালাম তার আপন চাচাতো বড় ভাই। তিনি যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তা কোনদিন আমি কল্পনায়ও ভাবিনী। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। তারাই বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে অভি’ব্যক্তি জানিয়েছেন টিপু।